JSONify
New
Profile
Logout
Form
JSON
Verified:
Show:
Age
Date of Birth
Pick a date
Date
05/08/2024
Gender
Image URL
Sources
Clear Data
Fill the fields
Bengali
Name
Info
Birth Place
Profession
Bio
রিটনের তিন শিশু সন্তান রয়েছে। এই সন্তানদের উৎসুক চোখ এখন কেবল বাবাকেই খোঁজে। বাবার বয়সী কাউকে দেখলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে তারা। এদিকে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন রিটনের স্ত্রী আফসানা বেগম। রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকায় রিটন উদ্দিন (৩২) আকিজ গ্রুপের সেলস ম্যানের চাকুরি করতেন। তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ছিল তার সংসার। আছেন বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোন। চাকুরির কারণে রিটন ঢাকায় থাকতেন। সন্তান ও স্ত্রী থাকতো গ্রামে। রিটন গত ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ি এলাকায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। তাকে হারিয়ে নিঃস্ব এখন পরিবার। কান্না থামছে না সন্তানদের ও বাবা-মায়ের। রাজধানীর বংশাল থানার ৮৪/এ কসাইটুলির বাসায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস’র প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদ মো. রিটন উদ্দিনের ছোট ভাই আরিফ উদ্দিন এসব কথা জানান। রিটনের বাড়ি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার নলচিরা ইউনিয়নের লামছড়ি গ্রামে। বাবা আবুল কালাম (৬০) ও মা নাসিমা বেগম (৪৮)। বাবা ২০০৮ সালে একবার এবং ২০১২ সালে আবারো স্ট্রোক করেন। এর পর থেকেই তিনি অসুস্থ। অসুস্থতার কারণে তিনি আর কোন কাজ করতে পারেন না। সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। শহিদ রিটনের স্ত্রীর নাম আফসানা বেগম (২৯)। রিটনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে আব্দুর রহমান রিহান (১০), মেজ ছেলে আতিকুর রহমান হৃদয় (৮) এবং মেয়ে আনিশা রহমান। তার বয়স মাত্র ১১ মাস। তার বয়স পাঁচ মাস না পেরুতেই সে পিতৃহীন হলো। ছেলে রিহান ও হৃদয় গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় স্কুলে পড়ালেখা করছে। রিটনের স্ত্রী আফসানা বলেন, ‘আমার স্বামী খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন। কিন্তু আল্লাহ আমার কপালে সুখ লিখে রাখেনি, তাই আমার স্বামীকে অসময়ে নিয়ে গেলেন।’ তিনি কান্না করতে করতে প্রশ্ন করেন, তাদের সুখের সংসারে এমন পরিস্থিতি কেন হলো? তাঁর সন্তানদের ভবিষ্যৎ কি হবে? নিরাপত্তা কে দেবে? সংসার কিভাবে চলবে? তার কোন আয় রোজগার নেই। এসব প্রশ্ন করে তিনি আবার কাঁদতে থাকেন। পরিবারের বড় ছেলে রিটন উদ্দিনের ছোট ভাই আরিফ উদ্দিন (২৮) ও ছোট বোন মিশু বেগম (২২)। আরিফ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। আর বোন মিশু ইডেন কলেজে বাংলা বিভাগে অনার্স চতুর্থ বর্ষে লেখাপড়া করছেন। ভাই-বোনসহ পরিবারের সমস্ত খরচ বহন করতেন রিটন উদ্দিন। রিটনের ভাই আরিফ উদ্দিন বলেন, ভাই আকিজ গ্রুপে সেলস ম্যানের চাকুরি করতেন। তার দায়িত্ব ছিল যাত্রাবাড়ি এলাকায়। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে, তিনি কাজ বাদ দিয়ে আনন্দ মিছিলে যোগ দেন। তারপর মিছিলটি যাত্রাবাড়ি থানার সামনে গেলে পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। প্রথম গুলি তার হাতে লাগে। পরের গুলি পাঁজরের পাশে ঢুকে বের হয়ে যায় এবং তৃতীয় গুলি তার নাভি দিয়ে ঢুকে পেছন দিয়ে বের যায়। তিনি বলেন, আমার ভাই সরকার বিরোধী যে কোনো আন্দোলনে সমর্থন দিতেন। এর প্রধান কারণ ছিল দুটি। এক, আওয়ামী সরকারের ইসলাম বিদ্বেষ। দুই, এই সরকার থাকলে আমার চাকুরি হবে না। এরই ধারাবহিকতায় আমার ভাই ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন। সরকারের পতনের খবরে সেদিন ছুটি নিয়ে বিজয় মিছিলে যোগদান করেন। তাকে হারিয়ে আমার বাবা-মা ও তার পরিবার বলতে গেলে পাগল হয়ে গেছে। এদিকে রিটন শহিদ হওয়ার পরদিন ৬ আগস্ট ২২ হাজার টাকা দিয়ে ট্রাক ও ৫ হাজার টাকা দিয়ে নৌকা ভাড়া করে লাশ নেওয়া হয় তার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে জানাজা শেষে পাশেই নানাবাড়ি চরকিং ইউনিয়নের ২২নং গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। রিটনের গ্রামের বাড়ি নদী ভাঙ্গাকবলিত হওয়ায় তাকে নানাবাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ভাই আরিফ উদ্দিন আরও বলেন, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃ-বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ করেছি। বিগত কয়েক বছর থেকে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইবা দিয়েছি, কিন্তু আমার কোন চাকুরি হয়নি। তখন ভাইয়ের ধারণা হয়েছিল, এই সরকার থাকলে আমার চাকুরি হবে না। তাই সুযোগ পেলেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমার ভাই আন্দোলনে যেত। কিন্তু তার আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়টি আমার ধারণারও বাইরে ছিল। রিটন ১৬ জুলাই থেকে তার কাজের ফাঁকে ফাঁকে শনিরআখড়া এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। ৫ই আগস্টও তিনি বিজয় মিছিলে যোগ দেন। মিছিলটি যখন যাত্রাবাড়ি থানার সামনে আসে তখন পুলিশের গুলিতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। ভাইয়ের সাথে ২ আগস্ট দুপুরে শেষ দেখা হয়েছিল জানিয়ে আরিফ বলেন, ‘ঢাকায় আমরা বংশালের কসাইটুলিতে থাকি। আমি ও আমার বোন এই এলাকায় টিউশনি করি। বাবা-মা ঢাকায়ও থাকেন, আবার গ্রামের বাড়িতেও থাকেন। ভাই চাকুিরর কারণে যাত্রাবাড়ি থাকতেন। প্রতি শুক্রবার ভাই আমাদের বাসায় আসতেন। শুক্রবারে আমি আর ভাই এক সাথে নামাজ পড়তে যেতাম এবং দুপুরের খাবার খেতাম। ২ আগস্ট ভাই এসেছিলেন। আমি তাকে বারবার বলেছি তোমার আন্দোলনে যাওয়ার দরকার নেই। সেদিন পারিবারিক বিষয়ে অনেক কথাই হয়। তিনি বলেন, ভাই সব সময়ে আমাকে বলতেন, ছোট হলেও একটা সরকারি চাকুরি তুই করবি। এর জন্য যদি আমার শরীরের সব রক্ত দিতে হয় আমি দেব, তাও তোকে সরকারি চাকুরি করতেই হবে। ভাই শহিদ হয়েছেন, জানি না ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো কি না, এই বলে কান্না করতে থাকেন তিনি। সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে শহিদ রিটনের ভাই আরিফ বলেন, ৫ আগস্ট সকাল ১১ টার সময়ও আমি তাকে বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আমার কথা শুনে নাই। আমি তখন শহিদ মিনার হয়ে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন সময় দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটের মত। এমন সময়ে ফোনে আমার বন্ধু জানায় বড় ভাইয়ের গুলি লাগছে। আমি ভাবছিলাম, হয়তো রাবার বুলেট লাগছে। তাই ওকে বলি দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসতে। আমার বন্ধু অনেক কষ্ট করে ঢাকা মেডিকেলে আমার ভাইকে নিয়ে আসে। পথে আমার ছোট বোনের সাথে আমার বন্ধুর দেখা হয়, তখন তাকেও সাথে নিয়ে মেডিকেলে আসে। ঢাকা মেডিকেলে যখন ভাইকে নিয়ে আসা হয় তখন দেখি ভাইয়ের ডান হাতটা প্রায় বিচ্ছিন্ন। তখন আমি ভাবি হয়তো হাতটা কেটে ফেললে ভাইকে বাঁচানো যাবে। পরে দেখি ভাইয়ের আর একটা গুলি পাঁজরের পাশ দিয়ে ঢুকে বের হয়ে গেছে এবং তৃতীয় গুলি তার নাভি দিয়ে ঢুকে পেছন দিয়ে বের গেছে। এইটা দেখে আমি আশা ছেড়ে দেই। তখন চিকিৎসকরা দেখে তাকে রক্ত দিতে বলেন। আমি তাড়াতাড়ি তিন ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দেই। দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর ভাই মারা যায়। কারো কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে আরিফ উদ্দিন বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে পাঁচলাখ টাকার চেক ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছি। ছেলের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মা নাছিমা বেগম। তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নির্দোষ ছেলেডারে মাইরা ফেলল। আমার বুক খালি কইরা দিল। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘রিটনের ছেলে ও মেয়েসহ আমার পরিবারের নিরাপদ ভবিষ্যত চাই। আমার বড় ছেলের আয় দিয়েই আমার সংসার চলতো। এখন রিটনের তিনটা ছোট সন্তানের কি হবে? কিভাবে চলবে আমাদের সংসার? মেয়েটাকে বিয়ে দিতে হবে। আমি অসুস্থ, মাসে অনেক টাকার ওষুধ লাগে। কি ভাবে যে কি হবে। ছোট ছেলেটাও এখনও চাকরি পায়নি। ওর জন্য যদি সরকার একটি চাকুরির ব্যবস্থা করতো তাহলে আমার পরিবারটা বাঁচতো। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ পাশাপাশি যারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত হয়েছেন রাষ্ট্রীয় ভাবে সবাইকে শহিদের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
Cause
পুলিশের গুলিতে নিহত।
English
Name
Info
Birth Place
Profession
Bio
Riton Uddin's three children are now looking only for their father. Whenever they see someone of their father's age, they stare at them with tearful eyes. Meanwhile, Riton's wife, Afrosa Begum, is worried about the future of the children. Riton Uddin, 32, worked as a salesperson for Akij Group in the Jatrabari area of Dhaka. He lived with his three children and wife. His parents and younger siblings also lived with them. Due to his job, Riton lived in Dhaka, while his children and wife lived in the village. On August 5, the police shot and killed Riton in the Jatrabari area. Now, the family is left without a guardian. The children and parents are crying incessantly. Riton's wife, Afrosa Begum, 29, has two sons and a daughter. The eldest son, Abdur Rahman Rihan, is 10 years old, the middle son, Atikur Rahman Hridoy, is 8 years old, and the daughter, Anisha Rahman, is only 11 months old. She became an orphan before she was even five months old. Rihan and Hridoy are studying at a local school in the village. Afrosa Begum said, "My husband was a very good person. He was not involved in any politics. He lived a very simple life. But God did not write happiness in my destiny, so my husband was taken away from me prematurely." She cried and asked, "Why did this happen to our happy family? What will happen to my children's future? Who will provide for their security? How will our family survive? I have no income, and we have no one to rely on." Riton's younger brother, Arif Uddin, 28, and younger sister, Mishu Begum, 22, are also part of the family. Arif Uddin has a master's degree in anthropology from Jagannath University, and Mishu Begum is studying Bengali at Eden College. Arif Uddin said, "My brother was a supporter of any movement against the government. The main reason was the government's hatred for Islam. My brother used to participate in the student movement. When the news of the former Prime Minister's resignation came, he took a day off from work and joined the victory procession. He was shot by the police in front of the Jatrabari police station." Arif Uddin added, "My brother was not apolitician, but he used to support any movement against the government. On August 5, he was shot by the police during a procession. I was with him on August 2, and I told him not to participate in the movement, but he didn't listen to me." Riton's body was taken to his village home on August 6, and after the janaza, he was buried in the nearby graveyard. Arif Uddin said, "I got a check for 500,000 taka from the July Foundation and 100,000 taka from the Jamaat-e-Islami." Riton's mother, Nacchima Begum, is still grieving and demands justice for her son's death. She said, "They shot my innocent son and made my heart empty. I want justice for my son's murder." Riton's father, Abul Kalam, said, "I want a secure future for my grandchildren. My eldest son was the only breadwinner of our family. Now, how will our family survive? My youngest son is still unemployed. If the government could provide him with a job, our family would be saved. I demand justice for my son's murder." He also demanded that the government recognize all those who died in the anti-government movement as martyrs.
Cause
Killed by police firing.
Submit Edit Request